Silk Route Thrills Zuluk Expedition

Silk Route Thrills, Zuluk Expedition ,LDFK এই শিরোনামে গত 21মে থেকে 26মে তে হয়ে গেল আমাদের সবার প্রিয় লং ড্রাইভ ফ্রম কোলকাতা গ্রুপের একটি আকর্ষনীয় সমবেত ট্যুর এবং ড্রাইভ। 21মে সকালে 20টি গাড়ী রওনা দেয় আর সন্ধ্যার আগেই পৌঁছে যায় শিলিগুড়ি র একটু আগে মিরামার রিসর্টে।সকাল সাড়ে 5টা নাগাদ আমার সাথে দেখাও হল অ্যাডমিন সুখেন্দু সোমালির সাথে মধ্যমগ্রাম চৌমাথা তে। সাথে বাকি বন্ধুরাও ছিলেন ।সন্ধ্যার দিকে আমরা বেরোলাম মধ্যমগ্রাম থেকে ,হাওড়ার দিক থেকেও আরোও দুটো গাড়ীতে তিনটি পরিবার বেরিয়ে প্রায় একসাথে ভোরবেলা গিয়ে হাজির হলাম ওই মীরামার রিসর্টে। আজ 22মে একটু বিশ্রাম নিয়ে ফ্রেশ হয়ে একসাথে 23 টি গাড়িতে শুরু হল চ্যালেঞ্জিং জুলুক ট্যুরের প্রথম পর্ব।শিলিগুড়ি পেরিয়ে সেবক এর আগে একজায়গায় টিফিন করে যখন বেরোনো হলো তখন আকাশ ভেঙ্গে যেন বৃষ্টি শুরু হল। NH10 ধরে আমরা রংপো চেক পোস্টের দিকে এগোতে থাকলাম, পাহাড় দিয়ে কাদা গোলা জলের সাথে পাথর ও গড়িয়ে পড়ছে রাস্তার ওপর,পথে কয়েকটা ধসপ্রবন জায়গা পেরিয়ে সবাই নিরাপদে রংপো চেকপোস্ট পেরিয়ে একত্রিত হয়ে এগিয়ে চললাম aritar এর পথে। রাস্তায় দুয়েক বার থেকে চা খেয়ে aritar এ ঢোকার মুখে এসে ভীষণ বাজে রাস্তার চ্যালেঞ্জের সামনে পড়লাম। রাস্তায় কাজ চলায় বৃষ্টির জলে কাদায় সত্যিই অফ রোডিং করে আমরা পৌছালাম aritar এর ইকো লগ hat রিসর্টে। খুব ভালো লাগলো দেখেই। আমাদের আজকের রাতের আস্তানা। সবাই যে যার রুমে গিয়ে ফ্রেস হয়ে লাঞ্চ করে এবার বিশ্রাম। বিকালে দারুন আড্ডা হল। আমাদের 5টা গাড়ীর পরিবার দের অবশ্য থাকার ব্যবস্থা হয়েছিল পাশের একটা হোটেল এ। কাল আমাদের যাওয়া juluk ।
আজ 23মে সকালে সবাই যথাসম্ভব গাড়ী পরিস্কার করে নিলাম কারন আগেরদিনের বৃষ্টিতে জলে কাদায় মাখামাখি হয়ে কারো গাড়ীর রং বোঝা যাচ্ছিলনা। প্রাতরাশ সেরে সবাই বেরিয়ে aritar থেকে নেমে একটু নিচের দিকে সিদ্ধি বিনায়ক মন্দির দেখে রংগলি চলে এলাম। এখানে অ্যাডমিন সুখেন্দু ও আরোও কয়েকজন পারমিশন জোগাড় করতে ব্যস্ত হয়ে পড়ল আর কিছু জন মার্কেটিং এ। আমি আশেপাশের প্রকৃতির দৃশ্য দেখে আশ মিটিয়ে নিলাম। তারপর এগোলাম পরবর্তী চেকপোস্ট সিঙ্গতাম এর দিকে। কাগজ পত্রের ঝামেলা মিটিয়ে আমরা সবাই পৌঁছে গেলাম অবশেষে Zuluk এ। এখানে আমাদের তিনটি homstay তে থাকার ব্যবস্থা ছিল। রাতে ছিল বুদ্ধ পূর্ণিমা। খুব ভালো লাগছিল চারিদিক, ঝকঝক করছিল চরাচর। খুবই মায়াবী পরিবেশ কিন্তু ঠাণ্ডা খুব বাইরে। ঘরে ঢুকে যেতে বাধ্য হলাম। পরদিন আমাদের সিল্ক রুট এক্সপ্লোর করার দিন। ডিনার করে ঘুম দিলাম।
আজ 24 মে সকালে 8টা নাগাদ সবাই প্রাতরাশ সেরে বেরিয়ে গেল যদি নাথুলা যাওয়ার পারমিশন পাওয়া যায় সেই আশাতে। আমরা 9টা তে বেরিয়ে সিল্ক রুটে কিছুটা উঠতেই দেখি কাঞ্চন কে দেখা যাচ্ছে আর নিচের দিকে সিল্ক রুটের জিগজ্যাগ রাস্তা। কিছু ছবি তুলে এগিয়ে একটুখানি গিয়ে দেখি ওপরে দারুন রাস্তা বানিয়ে ফেলেছে BRO, মনের সুখে কখনও 60 কিমি স্পিডও তুলতে পারে যাচ্ছে এত ভালো রাস্তা রয়েছে। আগে চলে গেলাম নতুন বাবা মন্দির, তারপর কুপূপ লেক দেখে, পুরান বাবা মন্দিরে নমস্কার করে প্রসাদ নিয়ে কিছু ছবি তুলে পথে একবার কফি ব্রেক নিয়ে বেলা দেড়টার মধ্যে হোটেলে ফিরে এসে লাঞ্চ করে বিশ্রাম করলাম। পথে একটু বৃষ্টি আর খুব fog পেয়েছিলাম। পরে তিনটার দিকে বাকিরা ফিরে বলল তারাও বৃষ্টি আর কুয়াশায় গাড়ী চালিয়ে খুব খুশী। এভাবে Zuluk এক্সপিডিসন শেষ হল , আগামীকাল আমরা যাব ঋষিখোলা।
আজ 25মে সকালে ফটো সেসন এর পর সবাই নামতে শুরু করলাম । পথে রাস্তার কাজ হচ্ছিল এক জায়গায়,সেখানে আমাদের সামনে দুটো dampar আর নিচে থেকে উঠে আসা দুটো dampar মুখো মুখি হয়ে রাস্তা জ্যাম হয়ে অনেক দেরি হয়। তখন আমাদের দুই নবীন সদস্য শুভজিৎ আর প্রীতম গাড়ী থেকে নেমে অনেক চেষ্টা করে আমাদের গাড়ী গুলো কে এদিক ওদিক করে রাখিয়ে রাস্তা পরিষ্কার করে নিচ থেকে আসা গাড়িগুলোকে যাবার পথ করে দিয়ে আমাদের পথ পরিষ্কার করতে সাহায্য করল, ওদের জন্য অনেক 💐💟। এরপর আরামসে নেমে এসে সোজা risikhola monkey lodge। শেষের কিছুটা রাস্তা নেই, offroding। শেষে নদী পেরিয়ে লজের পার্কিং। সেখানে একটু নাটক হলো, মিস্টার প্রধান এসে বললেন গাড়ী নিচে পার্কিং করতে হবে কারণ দুদিন আগে কোনো গাড়িতে নাকি ডগি চাপা পড়েছিল। অনেক বাদানুবাদের পর সেযাত্রা মুক্তি হল। তারপর কারেন্ট নেই, কিছু বললেই ফোন নম্বর ধরিয়ে দেয় ফোন করার জন্য। লাঞ্চ করে আমরা সারা দুপুর বাইরে বসে কাটিয়ে সন্ধ্যার মুখে কারেন্ট এলে স্নান করে শান্তি পেলাম। জায়গাটা বেশ। অনেকে নদীর জলে গাড়ী ধুল, নিজেরা স্নান ও করল। ধীরে ধীরে সন্ধ্যা নামল , বারান্দায় বসে চা পকোড়া খেতে খেতে চারিদিকে আলো জ্বলে উঠল, মন টাও বেশ ভালো হয়ে গেল। আসলে কদিন ঠান্ডা তে থেকে এসে একটু গরম লাগছিল। নদীর পাড়ে বসে আবার চা পকোড়া খেয়ে গল্প করতে করতে রাত 10টা বেজে গেল, ডিনার করে শুতে গেলাম। কাল ভোরে বেরোতে হবে কারণ কাল রাতে রেমেল আসার আগেই পৌঁছে যেতে হবে বাড়ীতে। ভোর 5টায় উঠব ভেবে শুতে গেলাম।
আজ 26মে ভোরবেলা উঠে 6টা 50সে বেরিয়ে পড়লাম ঘরে চা করে খেয়ে। অতনু আরোও সকালে বেরিয়ে গেছে। রঙ্গপো তে সিকিম বর্ডার পেরোবার আগে সস্তার তেল দিয়ে আমার সুন্দরীর পেট ভরিয়ে দিলাম। এরপর সোজা এসে থামলাম ঘোসপুকুর পার করে BPCL এর আপনা ঘর এ। এগারোটা নাগাদ এখান থেকে আলু পরোটা আর কফি দিয়ে নিজেদের উদরপূর্তি করে রাত দশটায় বাড়ী ঢোকার টার্গেট সেট করে ঠাণ্ডা জল কোল্ড ড্রিংক গুছিয়ে নিয়ে স্টার্ট করলাম । ঠিক দুপুর দুটোর দিকে ফারাক্কা পার করে কিছুটা আরোও এগিয়ে আদিত্য ধাবা তে দাড়ালাম morgram পার করে। তখন বেশ মেঘ আকাশে। হালকা টিফিন করে আধঘন্টা রেস্ট নিয়ে চাকার হাওয়া চেক করে নিয়ে শেষ ল্যাপ শুরু হল। কৃষ্ণনগর পার করে শুরু বৃষ্টি , বহরমপুর এও পেয়েছিলাম বৃষ্টি। মোটামুটি রাত সাড়ে নটায় বাড়ী ঢুকে গেলাম নির্বিঘ্নে ঠাকুরের আশীর্বাদে। জয় বড় মা।
Remel না আসার থাকলে আমরা কোথাও একদিন থেকে আমাদের বরাবরের মত শিলিগুড়ি থেকে নাইট ড্রাইভ করেই আসতাম তবে প্রথমবার দিনে ড্রাইভ কিন্তু বেশ ভালো লেগেছে। এটা remel একটি ভালো দিক আমাদের জন্য।